কলকাতা: বাংলায় বাম-কংগ্রেসের (Left-Congress) উত্থান দেখে তৃণমূল হতাশ বলে মন্তব্য করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)। মঙ্গলবার বহরমপুরে অধীর বলেন, বাংলার রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তি মানে বাম এবং কংগ্রেস যেভাবে তাদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে, তাতেই নরেন্দ্র মোদি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) উভয়েই আতঙ্কিত। মোদি এবং দিদি তাই ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। এই দুই দলের মনমতো হয়, এমন এজেন্ডা সামনে আনা হচ্ছে। দেশে এবং বাংলায় চাকরি নেই, রুটি, রুজি নেই, শিল্প নেই। সেখানে শুধু হিন্দু, মুসলিম করা হচ্ছে। হিন্দুকে বাঁচাতে কোনও সাধুসন্ত, পীর, ফকিরের দরকার নেই। মোদি, দিদির দরকার নেই। একদল বলছে, হিন্দুদের বাঁচাব। আর এক দল বলছে, সংখ্যালঘুদের বাঁচাব।
এই প্রসঙ্গেই অধীর এদিন রামনবমীতে রেজিনগরের দাঙ্গার কথা তুলে আনেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। নাহলে মুর্শিদাবাদের এসপিকে নির্বাচন কমিশন (Election Commission) সরিয়ে দিলে মুখ্যমন্ত্রী কী করে বললেন, এরপর দাঙ্গা হলে আমি কমিশনকে ছাড়ব না। তিনি কি জানতেন, দাঙ্গা হবে? কংগ্রেস নেতা বলেন, আমি যখন বহরমপুর হাসপাতালে ওই ঘটনায় আহতদের দেখতে গেলাম, তখন বিজেপি স্লোগান তুলল, হিন্দু আক্রান্ত হচ্ছে কেন, অধীর চৌধুরী জবাব দাও। পুলিশের সামেন সেদিন সব ঘটেছে। তখন দিদি চুপচাপ ছিলেন।
আরও পড়ুন: ধর্ম নিয়ে নিকৃষ্ট রাজনীতি করছেন মমতা, অভিযোগ অধীরের
মঙ্গলবার অধীর ফের মমতার বিরুদ্ধে মুখ খোলায় রাজ্য কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা খুশি। কয়েকদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী এক নির্বাচনী সভায় বলেন, ইন্ডিয়া জোট জিতলে আমরা বাইরে থেকে সরকার গড়তে সাহায্য করব। তৃণমূল নেত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় অধীর বলেন, দিদি এখন জল মাপছেন। মমতাকে কেউ বিশ্বাস করে না। তিনি আবারও বিজেপির হাত ধরতে পারেন। তিনি এক এক সময় এক এক কথা বলেন। অধীরকে বেঁধেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও। তিনিও বলেন, মমতা প্রথমে ইন্ডিয়া জোটের ট্রেনে উঠেছিলেন। আবার মাঝপথে নেমে গিয়েছেন। তাঁর কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। হাওয়া বেগতিক দেখে পরের দিন মমতা আর এক সভায় তাঁর আগের দিনের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দেন। তৃণমূল নেত্রী বলেন, সর্বভারতীয় স্তরে আমাকে কেউ কেউ ভুল বুঝেছেন। আমি বলতে চেয়েছি, বাংলায় আমি ইন্ডিয়া জোটে নেই। কারণ সিপিএম, কংগ্রেস বাংলায় বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। কিন্তু আমরা জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটে ছিলাম, আছি, থাকব। আমি ইন্ডিয়া জোটের (India Alliance) প্রতিষ্ঠা করেছি। নামটাও আমারই দেওয়া।
অধীর তৃণমূল নেত্রী সম্পর্কে মন্তব্য করায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) বলেন, মমতা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধীর কেউ নন। তার জন্য আমরা আছি, হাইকমান্ড আছে। দলের লাইন না মানলে বাইরে চলে যেতে পারেন। যা শুনে অধীর বলেন, আমিও দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। আমিও হাইকমান্ড। যারা বাংলায় কংগ্রেসের ক্ষতি করবে, তাদের আমি খাতির করতে পারব না। মমতার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত বিদ্বেষ নেই। আমার বিরোধিতা নৈতিক বিরোধিতা। দলের পদাতিক সৈনিক হিসেবে বাংলার কংগ্রেসকে রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমি সেই লড়াই থামাতে পারব না। সোমবার অবশ্য খাড়্গে অধীরকে লড়াকু বলে সম্বোধন করেন।
অন্য খবর দেখুন